সরকারি
চিকিৎসা সেবা নামকাওয়াস্তে রোগিকেই অধিকাংশ খরচ বহন করতে হয়
কাঙ্খিত
পর্যায়ে পৌছাতে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পুষ্টিকে গুরুত্ব দিতে হবে
সরকারি
হাসপাতালে সেবা পেতে মোট ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ খরচ বহন করতে হচ্ছে রোগিকে। এর
ফলে দেশের গরিব মানুষকে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় বিনা খরচে সেবা দেওয়ার সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ফাঁকা বুলিতে পরিণত
হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার
ব্র্যাক সেন্টারে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) আয়োজিত দারিদ্র বিমোচনে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ
শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন। সেমিনারে বিভিন্ন বক্তার আলোচনায় উঠে
আসে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশার
চিত্রটি। সেবা নিতে
এসে মেডিকেল ফি, ইউজার্স ফি, ওষুধ, বীমা,
ডায়াগনস্টিক
টেস্টসহ আনুষঙ্গিক খাতে জনগণের পকেটের টাকা
ব্যয় হচ্ছে। এই ব্যয় একটি
সংসারের মোট ব্যয়ের শতাংশেরও বেশি। এর
ফলে দরিদ্র পরিবারগুলোকে তাদের অন্যান্য
ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের বাণিজ্যিকীকরণের ফলে দিন দিন এ খাতে ব্যয়
নির্বাহ করা জনগণের জন্য কঠিন থেকে কঠিনতর
হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর
প্রেক্ষাপটে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে
সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার আওতায় বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বীমা প্রচলনের সুপারিশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে থাইল্যান্ড, কিউবা,
তাইওয়ান,
ইরান
এবং আফ্রিকার রুয়ান্ডা ও ঘানায় প্রচলিত স্বাস্থ্য বীমার
উদাহরণ উল্লেখ করা যায়। স্বাস্থ্য
বীমা কার্যকরের ফলে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা পেতে
মোট খরচের মাত্র ২০ শতাংশ পকেট থেকে খরচ করতে হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের
ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতভাবে পৌছে দেয়ার জন্য দেশের প্রতিটি মেডিকেল
কলেজকে একটি নির্দিষ্ট এলাকার দায়িত্ব দেওয়া
দরকার। এতে করে তারা ওই এলাকায় কার্যকরভাবে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দিতে পারবে। তিনি হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত
করতে পারছে না বলে অভিমত প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের
অর্থনৈতিক সূচকের চেয়ে
স্বাস্থ্য সূচকের অবস্থা ভালো। তবে
কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌছাতে স্বাস্থ্যের
পাশাপাশি পুষ্টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দাতা
সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভর না
করে সরকার যদি নিজ অর্থায়নে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতের উন্নয়নে কাজ করে তাহলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে।
No comments:
Post a Comment